বৈশ্বিক অর্থবাজারে অনিশ্চয়তা বাড়ার জেরে বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। ঝুঁকি এড়াতে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের সর্বশেষ নীতি বৈঠকের কার্যবিবরণী এবং বিলম্বিত চাকরিবাজারের তথ্য প্রকাশের অপেক্ষায়ও বাজারে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
রয়টার্সের তথ্যমতে, গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৬টা ৩৩ মিনিট পর্যন্ত স্পট গোল্ডের দাম ০.৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৮৯.৫৯ ডলারে। ডিসেম্বর ডেলিভারির ফিউচার স্বর্ণের দামও ০.৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৯০.৩০ ডলার হয়েছে।
আজ প্রকাশ পেতে যাচ্ছে ফেডের সর্বশেষ সভার কার্যবিবরণী। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের সেপ্টেম্বর মাসের বিলম্বিত চাকরিবাজারের তথ্য। জরিপে দেখা যাচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৫০ হাজার নতুন চাকরি যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে অক্টোবরে দেশটিতে বেকারভাতা নেওয়া মানুষের সংখ্যা দুই মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গেছে।
কেসিএম ট্রেডের প্রধান বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, শক্তিশালী ডলার ও সুদহার কমানোর অনিশ্চয়তার কারণে স্বর্ণবাজার কিছুটা নড়বড়ে থাকলেও সামগ্রিকভাবে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের শক্ত অবস্থান বজায় আছে।
এদিকে ডলার সূচকও ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে, যা অন্যান্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণ কেনা আরও ব্যয়বহুল করে তুলেছে।
শেয়ারবাজারেও সপ্তাহজুড়ে বড় ধরনের পতন দেখা যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–সম্পর্কিত শেয়ারের অতিমূল্যায়ন নিয়ে উদ্বেগের কারণে টানা চারদিন ধরে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক নিচের দিকে।
গত মাসে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার কমালেও এ বছর আরেকটি হার কমানো নিয়ে এখনও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল। সিএমই ফেডওয়াচ টুল দেখাচ্ছে, ডিসেম্বরের বৈঠকে আরও একটি হার কমানোর সম্ভাবনা প্রায় ৪৯ শতাংশ।
সাধারণত সুদহার কমলে বা অর্থনীতি অনিশ্চয়তায় পড়লে স্বর্ণের দাম বাড়ে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতেও স্বর্ণ বাজার শক্তিশালী।
স্বর্ণের পাশাপাশি অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামও বেড়েছে। স্পট সিলভারের দাম বেড়েছে ১.৩ শতাংশ (প্রতি আউন্স ৫১.৩৩ ডলার), প্লাটিনাম উঠেছে ০.৫ শতাংশ (১,৫৪২.১৭ ডলার) এবং প্যালাডিয়াম বেড়েছে ০.৮ শতাংশ (১,৪১১.৮৬ ডলার)।