শীতকালে অনেকেই লক্ষ্য করেন, ত্বক শুষ্ক, শক্ত এবং রুক্ষ হয়ে যায়। তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার পতন এর একটি বড় কারণ—তবে সমস্যা কেবল ঠান্ডা বাতাসেই সীমাবদ্ধ নয়।
ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণ বোঝার জন্য আগে জানা দরকার, ত্বকের গঠন কেমন। ত্বকের তিনটি প্রধান স্তর আছে: ১. সবচেয়ে নিচের স্তর: এখানে চর্বি থাকে, যা শক্তি সঞ্চয় করে। ২. ডার্মিস: যেখানে রক্তনালি, স্নায়ু, ঘর্মগ্রন্থি ও লোমকূপ থাকে। ৩. এপিডার্মিস (সবচেয়ে বাইরের স্তর): এটি ত্বকের মূল সুরক্ষা আবরণ। শুষ্কতা এই স্তরেই ঘটে। এটি বহু স্তরের কোষ দিয়ে গঠিত। জীবিত কোষ নিচের দিক থেকে উঠে আসে, পরে মারা যায় এবং ত্বকের ওপরের অংশ থেকে ঝরে পড়ে। প্রায় এক মাস অন্তর এই স্বাভাবিক নবায়ন প্রক্রিয়া ত্বকের আর্দ্রতা কমে গেলে রুক্ষতা ও শুষ্কতার কারণ হয়।
শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় কেন?
ঠান্ডা বাতাস বইলে ত্বকের পৃষ্ঠ থেকে দ্রুত আর্দ্রতা বাষ্পীভূত হয়। ফলে ত্বক পানিশূন্য হয়ে পড়ে এবং টান টান, শক্ত ও খসখসে লাগে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের পাশাপাশি ঘরের হিটার ব্যবহার ও দীর্ঘক্ষণ গরম পানিতে স্নানও ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দূর করে দিয়ে শুষ্কতা বাড়ায়।
ত্বককে শুষ্কতা থেকে বাঁচানোর সহজ উপায়
হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন: অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করলে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যায়।
গোসলের সময় কমান: পানির দীর্ঘ সংস্পর্শ ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দূর করে।
গোসলের পরপরই ময়েশ্চারাইজার লাগান: এটি ত্বকের ভেতরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন: এই বৈদ্যুতিক যন্ত্র বাতাসে আর্দ্রতা যোগ করে, ফলে ত্বক পানিশূন্য হওয়া রোধ হয়।
এই ছোট পরিবর্তনগুলো ত্বকের প্রাকৃতিক কোমলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে নিস্তেজ বা রুক্ষ হওয়া থেকে রক্ষা করে।
যদি ত্বকে অতিরিক্ত চুলকানি, ফাটল বা রক্তপাতের মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে এটি শুধু ঋতুভিত্তিক সমস্যা নয়—বরং কোনো ত্বকের রোগের লক্ষণও হতে পারে। সেক্ষেত্রে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।