অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, দেশের ১৫ বছরের কম বয়সী ৫ কোটি শিশু-কিশোরকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, ‘টাইফয়েডের এই টিকা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, পৃথিবীর ২১টি দেশে এ টিকা চলমান রয়েছে। টাইফয়েড টিকা নেওয়ার পর অন্য টিকার মতোই সামান্য প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এ ছাড়া ন্যূনতম পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ছাড়া বড় কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। এ টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধারা পরীক্ষিত।’
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
সায়েদুর রহমান বলেন, ‘দেশে টাইফয়েড সংক্রমণ কমিয়ে আনতে এ প্রথম ‘টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন’ দেওয়া হচ্ছে। এ টিকা নিয়ে কোনো প্রকার সংশয় বা বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই। এর আগে যেসব দেশে এ টিকা দেওয়া হয়েছে সেখানে শিশুদের মধ্যে কোনো ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া অথবা অসুস্থতার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘টিকা দেওয়ার জায়গায় লালচে হওয়া, সামান্য ব্যথা, মৃদু জ্বর, ক্লান্তি ভাব হতে পারে; এগুলো এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। অনেক সময় সময় দেখা যায় একই সঙ্গে অনেক কিশোর-কিশোরী অসুস্থতা বোধ করছে বা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘ম্যাস সাইকোজেনিক ইলনেস’ বলে। যা টিকা গ্রহণের আগে বা পরে মানসিক ভীতিজনিত কারণে হয়। ভীতিজনিত এই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে টিকাজনিত অসুস্থতার কোনো সম্পর্ক নেই। আর এই টিকায় শরিয়ত নিষিদ্ধ কোনো উপকরণ নেই, টাইফয়েড টিকা সৌদি হালাল সেন্টারের হালাল সনদপ্রাপ্ত।’
বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘টাইফয়েড টিকায় একই সঙ্গে প্রোটিন ও শর্করা থাকায় দুটি উপাদানই শরীরে টাইফয়েড রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করে। তাই অন্যান্য টাইফয়েড টিকার তুলনায় এটি উন্নত এবং বেশি কার্যকর। বাংলাদেশে এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগও হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের শিশুদের নিরাপদ ও কার্যকর টিকাদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সামান্যতম সন্দেহ বা ঝুঁকি থাকলে সেই টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত সরকার কখনোই নেয় না। টাইফয়েড টিকা এবং ইপিআইয়ের সকল টিকা সঠিক তাপমাত্রায় পরিবহন এবং সংরক্ষণ করা হয়। তাই এ টিকা নিয়ে কোনো সংশয় বা বিভ্রান্ত হওয়ার অবকাশ নেই।’
এছাড়া, গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডির বরাতে তিনি জানান, ২০২১ সালে বিশ্বে ৭০ লাখের বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়, মৃত্যু হয় ৯৩ হাজারের। মৃতদের একটা বড় অংশ দক্ষিণ এশিয়ায়।