সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন? তাহলে আগে থেকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মত দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজভিত্তিক চিকিৎসক ও ‘সহায় হেলথ’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডা. তাসনিম জারা।
একটি ভিডিওবার্তায় তিনি সন্তান নেওয়ার আগে নারীদের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির ওপর জোর দেন। তার মতে, এই সময়কালের পরিকল্পিত প্রস্তুতি শুধু মায়ের নয়, সন্তানের সুস্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি যে ১০টি বিষয়ের প্রতি নজর দিতে বলেছেন, তা হলো:
১. ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ শুরু করুন
গর্ভধারণের অন্তত এক মাস আগে থেকেই ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড খাওয়া জরুরি। এটি শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সহায়ক।
২. প্রয়োজনীয় টিকা সম্পন্ন করুন
বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি সহ অন্যান্য বাকি থাকা টিকাগুলো নিতে হবে। এটি গর্ভকালীন সংক্রমণ এবং জটিলতা থেকে রক্ষা করে।
৩. আয়রন ঘাটতি পরীক্ষা করুন
রক্তস্বল্পতা থাকলে তা গর্ভাবস্থায় আরও মারাত্মক হতে পারে। তাই আগেভাগেই রক্তে আয়রনের মাত্রা পরীক্ষা করে চিকিৎসা নিতে হবে।
৪. ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণ করুন
এই ভিটামিন শিশুর হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অনেক নারীই সূর্যালোকের অভাবে ভিটামিন ডি ঘাটতিতে ভোগেন।
৫. ক্যাফেইন সেবন কমান
এক দিনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন (প্রায় ২ কাপ কফি) গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই ধীরে ধীরে এর মাত্রা কমাতে হবে।
৬. স্বাভাবিক ওজন ধরে রাখুন
ওজন অতিরিক্ত বা কম হলে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও প্রসবজটিলতার ঝুঁকি বাড়ে।
৭. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
ফাস্টফুড, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও তেল পরিহার করে শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস গড়তে হবে।
৮. ব্যায়াম করুন, শরীর প্রস্তুত করুন
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম শরীরকে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানে সহায়ক করে তোলে।
৯. ধূমপান বন্ধ করুন
নারী বা তার আশপাশের কেউ ধূমপান করলে সন্তান জন্মের সক্ষমতা ও শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
১০. পুরনো রোগ নিয়ন্ত্রণে আনুন
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা খিঁচুনির মতো যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকলে সন্তান নেওয়ার আগে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
ডা. তাসনিম জারা বলেন, “সন্তান নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে গর্ভকালীন সময় ও প্রসবকালীন জটিলতা অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব।”