শহীদ ওসমান বিন হাদির বক্তব্য বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের আধিপত্যবাদ, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে অক্লান্ত লড়াই করে গেছেন।
জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের পর থেকেই ওসমান হাদি দেশের রাজনৈতিক অরাজকতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তার ভাষায়, দেশের জন্য জীবন সর্বস্ব করা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। এক বার তিনি বলেছিলেন, ‘আল্লাহ যদি আমাকে নিয়ে যায়, আমার বাচ্চাটার দিকে একটু খেয়াল রাখবেন।’
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী গণসংযোগের পথে দুর্বৃত্তের গুলিতে গুরুতর আহত হন। সাতদিনের চিকিৎসার পর ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
হাদি বারবার বলেন, ‘জীবন যাবে তবু দেশপ্রেমে আপস করব না। জমিনের সঙ্গে গাদ্দারি করব না। ‘তিনি রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন, কেন রাজনীতি বেতন দেয় না, অথচ তাদের জন্য ছোট্ট একটি দোকান খোলারও ব্যবস্থা নেই। ক্ষমতার মোহে দেশের মর্যাদা বেচে দেওয়ার তীব্র নিন্দা করেন।
নির্বাচনে জয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জিতব এটিই প্রথম কথা নয়, রাজনীতিতে তরুণদের সামনে আনার চেষ্টা করছি। এই রাজনীতিতে নতুন ধারা আনব, যা আগামী ৫০ বছরে প্রভাব ফেলবে।’
তিনি এনসিপি’র দুর্নীতি ও জুলাই আন্দোলনকে কুক্ষিগত করার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘দশ মাস আগে আহত ছেলেরা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। যারা দুর্নীতি করেছে তারা বিদেশে পালাবে, কিন্তু জুলাই যোদ্ধারা জাহান্নামে ফেলে দেওয়ার দায় ইতিহাস ও আল্লাহর কাছে দিতে হবে।’
নিজের মৃত্যুকে সংগ্রামের মঞ্চে হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদের মৃত্যু বাসায় হবে না, বরং সংগ্রামে শহীদ হব। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তুমুল মিছিলে হাসতে হাসতে শহীদ হতে চাই।’
হাদি আরও বলেন, ‘আমরা শহীদ হয়ে আল্লাহর কাছে পৌঁছে যাবো, বেঁচে থাকলে লড়াই চালিয়ে যাব ইনসাফের জন্য। বাংলাদেশে নতুন জান্নাত আনব।’
৩ মাসের সন্তান সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন,‘আমার খুব ইচ্ছে করত বলার, আল্লাহ যদি আমাকে নিয়ে যায়, বাচ্চাটার দিকে খেয়াল রাখবেন।’
ওসমান হাদির এই উক্তিগুলো রাজনৈতিক মহলে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বুদ্ধকরণ, সতর্কতা ও নতুন প্রজন্মের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের বার্তা দেয়। তাঁর মৃত্যুর পরও দেশপ্রেম ও ইনসাফের জন্য লড়াইয়ের অঙ্গীকার স্মরণীয় হয়ে থাকবে।