মানুষের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া অত্যন্ত অস্বস্তিকর একটি সমস্যা। সাধারণভাবে, ঘন ঘন প্রস্রাব মানে হলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চাপ বোধ করা এবং বারবার প্রস্রাব করা। এটি দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং ঘুমেও ব্যাঘাত আনে।
অনেকেই শুরুতেই চিকিৎসা ছাড়াই এন্টিবায়োটিক খেতে শুরু করেন, যা বহু ক্ষেত্রে উল্টো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
🔹 কখন সমস্যা হিসাবে গণ্য হয়
দিনে ৪–৫ বার প্রস্রাব হওয়া সাধারণ। তবে তার চেয়ে বেশি হলে তা চিন্তার বিষয়। ঘন ঘন প্রস্রাব মানেই ডায়াবেটিস—এমন নয়। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন-
অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা ক্যাফিন সেবন
ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই)
পেলভিক অঞ্চলের সমস্যা
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
🔹 ব্লাডারের অতি সক্রিয়তা
এ সমস্যা হলে ব্লাডার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কাজ করে। অনেকের ক্ষেত্রে মূত্রথলি থেকে ছোট ছিদ্র দিয়ে মূত্র চুঁইয়ে পড়ার সমস্যা দেখা দেয়।
🔹 সম্ভাব্য কারণ
ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন: কিডনি বা মূত্রথলির সংক্রমণ
আউটফ্লো অবস্ট্রাকশন: বিশেষত পুরুষদের প্রস্টেট সমস্যা
নিউরোলজিক সমস্যা: পারকিনসন, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা স্ট্রোকের পর
দৈনন্দিন ওষুধ: উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ (ল্যাসিক্স, ডাইয়ুরেটিক্স)
মদ্যপান ও কফি অতিরিক্ত সেবন
🔹 ঝুঁকি কারা বেশি?
মহিলাদের মধ্যে মেনোপজ পরবর্তী রিস্ক বেশি
পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্টেট সমস্যাযুক্তদের ঝুঁকি বেশি
🔹 চিকিৎসা ও পরামর্শ
লক্ষণ দেখা দিলে ইউরিন কালচার, ব্লাডার ক্ল্যান, সিস্টোস্কোপি ও ইউরোডায়নামিক টেস্টিং করে ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার রোগ নির্ণয় করা হয়।
ঘরোয়া প্রতিকার ও যত্ন:
কফি, ক্যাফিন জাতীয় পানীয়, কার্বনেটেড ড্রিংক, মিষ্টি ও অ্যাসিডিক খাবার বর্জন করুন
ওজন বেশি হলে তা কমান
পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন
সারাদিনে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী বাথরুমে যান
সমস্যা থাকলে ডায়েরি রাখুন, যা চিকিৎসায় সাহায্য করবে
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সঠিক চিকিৎসা ও জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব