দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামোতে আসছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। দশ বছর পর সরকারি চাকুরীজীবীদের জন্য নতুন বেতন স্কেল তৈরি করছে বেতন কমিশন, যা কার্যকর হলে মূল বেতন প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এই পদক্ষেপ সরকারি কর্মীদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়াবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বেতন কাঠামোতে আসছে বিশাল পরিবর্তন
বেতন কমিশনের সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত নতুন কাঠামোতে প্রথম গ্রেডের সর্বোচ্চ বেতন প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, সর্বনিম্ন ২০তম গ্রেডের বেতন হবে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। এটি বর্তমান বেতন কাঠামোর তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি, যা সরকারি কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।
মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নতুন স্কেল ও গ্রেড কমানোর পরিকল্পনা
কমিশন বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন বেতন স্কেলের সুপারিশ জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও, বর্তমানে প্রচলিত ২০টি গ্রেড কমিয়ে বেতনের অনুপাতকে আরও যৌক্তিক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ করার বিষয়েও আলোচনা চলছে। এর ফলে বেতন বৈষম্য হ্রাস পাবে এবং একটি সুসংহত বেতন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই গেজেট প্রকাশ
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিশ্চিত করেছেন যে, নতুন বেতন কাঠামো অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই গেজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। এর জন্য পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের আগমন পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে না। এই দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত সরকারি কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি এনেছে।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি: ২০১৫ সালের পর আবার বড় বেতন বৃদ্ধি
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের বেতন স্কেল পুনর্গঠন করা হয়েছিল। সেই সময়ে সর্বোচ্চ গ্রেডের বেতন প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছিল এবং সর্বনিম্ন গ্রেডের বেতন প্রায় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমান উদ্যোগটি আবারও সরকারি কর্মীদের জন্য একটি ঐতিহাসিক বেতন বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে এসেছে, যা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই বেতন বৃদ্ধি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।