দাবি আদায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবিলম্বে শিক্ষকদের কাজে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কাজে ফিরে না গেলে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চাকরি আইন, আচরণ বিধিমালা ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবিলম্বে কাজে যোগদান করে শিক্ষার্থীদের তৃতীয় প্রান্তিকের পরীক্ষা নেওয়া সংক্রান্ত বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পন্নের জন্য নির্দেশনা দেওয়া যাচ্ছে।
অন্যথায় এ ধরনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চাকরি আইন, আচরণ বিধিমালা ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ অনুযায়ী, শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন শাস্তি তিরস্কার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরি থেকে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। গুরুদণ্ডসমূহের মধ্যে নিম্ন পদ বা নিম্নতর বেতন স্কেলে অবনমিতকরণ, বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, এবং চাকরি থেকে অপসারণও অন্তর্ভুক্ত।
মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে:
সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন প্রদানের দাবিসহ ১০ ও ১৬ বছর চাকরি শেষে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য হতে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিষয়ে ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বেতন স্কেল উন্নীতকরণের বিষয়টি বিবেচনার জন্য জাতীয় বেতন কমিশনের সভাপতিকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এ বিষয়ে পে-কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই অর্থ বিভাগ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে ১০ নভেম্বর অর্থ বিভাগ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, এই সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরেও সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন চলমান বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ না করে বিভিন্নভাবে বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি করেছেন এবং কোথাও কোথাও পরীক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষকদের ওপর হামলা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়ে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মসূচি গ্রহণ সরকারি চাকরি আইন, আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী এবং ফৌজদারি আইনেও বিবেচ্য।