নিয়মিত কম ঘুমিয়ে চলা এখন অনেকেরই রোজনামচা। কাজের চাপ, ব্যস্ততা কিংবা অতিরিক্ত মোবাইল স্ক্রিনে চোখ আটকে থাকার কারণে অনেকে রাত ২-৩টা পর্যন্ত জেগে থাকেন। আবার পরদিন সকালেই তাড়াতাড়ি উঠতে হয় অফিস বা অন্যান্য কাজের তাগিদে। এভাবে প্রতিদিনের অস্বাস্থ্যকর ঘুমের রুটিনেই বাড়ছে নানান শারীরিক সমস্যা।
চিকিৎসকদের মতে, দিনে ৭ ঘণ্টার কম ঘুম শরীরের স্বাভাবিক হরমোন ব্যালেন্স নষ্ট করে দেয়। এতে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত হয়, পুষ্টি শোষণেও সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে চিকিৎসক কুণাল সুদ জানান, কম ঘুমানোর ফলে শরীরে ক্লান্তি যেমন বাড়ে, তেমনই বেড়ে যায় ক্ষুধাও। ঘুম কম হলে ‘লেপ্টিন’ নামক হরমোনের মাত্রা কমে যায়, যার ফলে বারবার খিদে লাগে এবং কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটজাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। এতে দৈনিক ক্যালরি গ্রহণ প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
তাছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে গ্লুকোজ শোষণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, লিভার থেকে বেশি গ্লুকোজ নিঃসৃত হতে থাকে, যা ইনসুলিনের কাজ বাধাগ্রস্ত করে। এতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রোজ ৬ ঘণ্টার কম ঘুমান, তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় প্রায় ২৮ শতাংশ বেশি।
চিকিৎসকরা জানান, কম ঘুম শরীরে প্রদাহ বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায় এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই সুস্থতা ধরে রাখতে রোজ রাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি রাত জেগে ফোন বা স্ক্রিনে অতিরিক্ত সময় কাটানোর অভ্যাস থেকেও বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সঠিক ঘুম, সঠিক খাবার—এই দুইয়ের সমন্বয়েই সুস্থ জীবন সম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।