হঠাৎ পা, গোড়ালি বা পায়ের নিচের অংশ ফুলে উঠলে অনেকেই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এটি কি শুধু সাময়িক সমস্যা নাকি কোনো গুরুতর রোগের সংকেত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবসময় পা ফুলে যাওয়া বিপজ্জনক হয় না। সাধারণত এটি ঘটে যখন অতিরিক্ত তরল রক্তনালীর বাইরে গিয়ে টিস্যুতে জমা হয়। দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকা, বসে থাকা, পানিশূন্যতা বা গরম আবহাওয়া এমন ফোলাভাবের সাধারণ কারণ।
তবে কিছু বিশেষ লক্ষণ থাকলে সতর্ক হওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ:
ভেইনের দুর্বলতা
পায়ের শিরা যদি ঠিকমতো রক্ত ফেরত পাঠাতে না পারে, রক্ত নিচে জমে যায়। এতে পা ভারী মনে হয় এবং ফুলে ওঠে।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা
হার্ট দুর্বল হলে শরীরে রক্ত সঠিকভাবে সঞ্চালিত হয় না। এতে শরীরের তরল নীচের দিকে জমতে পারে, ফলে পা ফুলে যায়।
কিডনি বা লিভারের অসুস্থতা
দেহের তরল ব্যালান্স ঠিক না থাকলে পায়ের ফোলাভাব স্বাভাবিকভাবেই দেখা দিতে পারে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কিছু ওষুধ যেমন রক্তচাপের, হরমোনাল ওষুধ বা স্টেরয়েডও পায়ের ফোলা বাড়িয়ে দিতে পারে।
লিম্ফ্যাটিক ব্লকেজ
যদি লিম্ফনালী ব্লক হয়ে যায়, তখন লিম্ফেডেমা হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফোলাভাবের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কখন সতর্ক হবেন?
যদি পায়ের ফোলাভাব হঠাৎ বেড়ে যায়, শুধুমাত্র একটি পা ফুলে থাকে, ফুলে যাওয়া অংশে ব্যথা, লালচে ভাব বা তাপ অনুভূত হয় এবং সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, বুকের ব্যথা বা মাথা ঘোরা শুরু হয়, এটি রক্তজমাট বাঁধার সম্ভাব্য সংকেত। এ অবস্থায় দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
করণীয় সহজ কিছু অভ্যাস
প্রতিদিন অন্তত কিছুক্ষণ হাঁটা অভ্যাস করুন।
পা ঝুলিয়ে না রেখে মাটির চেয়ে উঁচুতে তুলেই রাখুন।
কম্প্রেশন স্টকিং ব্যবহার করতে পারেন।
লবণ গ্রহণ কমান।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
নিয়মিত ছোট পরিবর্তন ও সচেতনতা ফোলাভাব কমাতে সহায়ক। এছাড়া পায়ের অস্বাভাবিক ফোলাভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, যাতে বড় কোনো সমস্যার আগেই প্রতিকার নেওয়া সম্ভব হয়।