বছর শেষের প্রাক্কালে ফের আলোচনায় উঠে এসেছেন বুলগেরিয়ান অন্ধ ভবিষ্যৎদ্রষ্টা বাবা ভাঙ্গা। তাঁর নামে প্রচারিত নতুন ভবিষ্যদ্বাণী ঘিরে ইতোমধ্যেই সামাজিকমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ২০২৬ সাল হতে যাচ্ছে ভয়াবহ পরিবর্তন ও বিপর্যয়ের বছর—যেখানে প্রযুক্তি, রাজনীতি, প্রকৃতি ও মহাকাশ—সব ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে বড়সড় অঘটন।
যদিও এসব ভবিষ্যদ্বাণীর কোনো প্রামাণিক নথি পাওয়া যায়নি, তবুও সমর্থকরা মনে করেন, বাবা ভাঙ্গার অনেক ভবিষ্যদ্বাণী অতীতে সত্য হয়েছিল—যেমন লেডি ডায়ানার মৃত্যু, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সন্ত্রাসী হামলা, এমনকি সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনও।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে মানুষের নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কা
বাবা ভাঙ্গার নামে প্রচারিত তথ্যে বলা হচ্ছে, ২০২৬ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) মানুষের জীবনের নানা ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। চাকরি, প্রশাসন ও সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যন্ত্রের প্রভাব এতটাই বাড়বে যে মানবসভ্যতা “যন্ত্র শাসনের যুগে” প্রবেশ করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতোমধ্যে এআই প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি এই আশঙ্কাকে উসকে দিচ্ছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—মানুষ কি নিজেরই তৈরি প্রযুক্তির কাছে নিয়ন্ত্রণ হারাতে চলেছে?
ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা
ইউরোপীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বাবা ভাঙ্গা ২০২৬ সালকে “প্রকৃতির প্রতিশোধের বছর” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বিশাল ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ও চরম জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন, যা পৃথিবীর প্রায় ৭-৮ শতাংশ ভূমিপৃষ্ঠে প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান জলবায়ু সংকট ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি এই ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে কিছুটা সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ভিনগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগের ইঙ্গিত
সবচেয়ে আলোচিত দাবি হলো, ২০২৬ সালের নভেম্বরে নাকি একটি বৃহৎ মহাকাশযান পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে—যা মানবজাতির সামনে ভিনগ্রহের জীবনের অস্তিত্ব প্রকাশ করবে।
যদিও বিজ্ঞানীরা এমন কোনো ঘটনার সম্ভাবনাকে এখনই নাকচ করে দিয়েছেন, তবুও এই ভবিষ্যদ্বাণী সামাজিকমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
পুতিনকে “বিশ্বের প্রভু” হিসেবে বর্ণনা
বাবা ভাঙ্গার নামে প্রচারিত আরেকটি ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৈশ্বিক রাজনীতির কেন্দ্রীয় নেতায় পরিণত হবেন। তাঁর নেতৃত্বে রাশিয়া নাকি “নতুন যুগের ক্ষমতার কেন্দ্র” হিসেবে আবির্ভূত হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই দাবি রাজনৈতিক ব্যাখ্যার জন্ম দিচ্ছে।
জল্পনা না কি বাস্তব ইঙ্গিত?
বিজ্ঞানীরা এসব ভবিষ্যদ্বাণীকে নিছক কল্পনা বলে উড়িয়ে দিলেও, জনমনে কৌতূহল ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, ইতিহাসে যেভাবে কিছু পূর্বাভাস আংশিকভাবে মিলে গেছে, তাতে এই “২০২৬ ভবিষ্যদ্বাণী” একেবারেই উপেক্ষা করা যায় না।
নতুন বছরকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে এখন প্রশ্ন—বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী কি আবারও বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে?